১৮ জুন ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫, ৪:০৬ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

সচিবালয়ে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ঘোষণা

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫, ৪:০৬ পিএম

👁 23 views

সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সচিবালয়ে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানিয়েছে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। ধবার (২৮ মে) সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মচারীদের এক ঘণ্টার কর্মবিরতি চলবে। আর সারা দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও একই সময়ে কর্মবিরতি চলমান থাকবে। এর আগে সকালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেন, আন্দোলনরত সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের দাবিসমূহ মন্ত্রিপরিষদ সচিব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করবেন। তিনি দেশে ফেরার পরেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ-২০২৫ এর গেজেট জারি সৃষ্ট সংকট নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এ বিষয়ে গঠিত ৭ জন সচিবের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি বলেও জানান তিনি। কর্মচারীদের সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের কাছে তুলে ধরেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব দাবির বিষয়টি তাকে জানাবেন।

ভূমি সচিব সাংবাদিকদের আরও বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে তারা কর্মচারীদের কথা ও গতকালের আলোচনার বিষয়ে জানিয়েছেন। এখন এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়। তাই প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন তিনি।

ওই সময় সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে সচিবদের বৈঠকের বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেই আন্দোলন বিক্ষোভ কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এদিকে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে জাপান গেছেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামী ৩১ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত: সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বুধবারের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয় মঙ্গলবারই (২৭ মে)। দুপুরে ভূমিসচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের নেতৃত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী কিছু বিধান পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের চাকরি নিরাপত্তা ও পদোন্নতির বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মচারীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্দোলনে নেমেছেন।

জারি করা গেজেট:
সচিবালয়ে কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। অধ্যাদেশে চার অপরাধের জন্য চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে। তারা এ অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারীদের (আইনানুযায়ী সবাই কর্মচারী) চারটি বিষয়কে অপরাধের আওতাভুক্ত করা হয়।

সেগুলো হলো, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, এছাড়া কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন এবং যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

অধ্যাদেশে বলা হয়, অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাকে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বৈঠকে সংশোধিত সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। যা গত রোববার সন্ধ্যায় গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x